শেরপুরে ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরবর্তী চরে মিষ্টি কুমড়ার ব্যাপক ফলন হয়েছে। এই চরে পটল, শিম, বেগুন, লাউ ইত্যাদি সবজির পাশাপাশি বর্তমানে কৃষকরা কুমড়ার চাষ করছেন। অন্যান্য সবজির তুলনায় এর চাষ খুব সহজ ও খরচ কম। তাই কুমড়া চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা।
জানা যায়, শেরপুরে জেলার নকলা উপজেলায় চরঅষ্টধর, চন্দ্রকোনা, পঠাকাটা, উরফা, টালকী ও বানেশ্বরদীইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরের এলাকাগুলোতে ব্যাপক পরিমানে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করা হয়েছে। কৃষকরা আগাম গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষের জন্য ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত মিষ্টি কুমড়ার বীজ বপন করা হয়। কৃষকরা মৌসুমী গোলআলু, পটল, শিম, বেগুন, লাউ, ঢেঁড়স, ঝিঙা, বেগুন, চিচিংগা, টমেটো ও করলাসহ বিভিন্ন শাক-সবজির আবাদের পাশাপাশি কুমড়ার ব্যাপক চাষ করেছেন। বর্তমানে কৃষকরা তাদের জমির মিষ্টি কুমড়া তুলে বাজারে বিক্রি করছেন। নকলা উপজেলার সবজি সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে এর অনেক চাহিদা রয়েছে।
টালকী ইউনিয়নের মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমি এবছর ৯০ শতাংশ জমিতে গোলআলুর পাশাপাশি মিষ্টি কুমড়ার বীজও বপন করেছি। গোলআলু তোলার পর কুমড়ার গাছ গুলো চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। সব মিলিয়ে আমার ১৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আশা করছি লাভবান হতে পারবো।
কুমড়া চাষি হাবিবুল্লাহ বলেন, আমাদের চরের জমিগুলো অনুর্রব হওয়ায় যা চাষ করতাম কিছুই ফলন পেতাম না। কৃষি বিভাগের পরামর্শে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেছি। এতে খরচ কম হয়েছে এবং জৈব সারের মাধ্যমেই ভালো ফলন পেয়েছি। শুরুতে প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া ২০-২৫ টাকা দরে বিক্রি করতে পারলেও এখন দাম কমে ১২-১৫ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি করতে পারছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, চলতি বছর এই উপজেলায় ২০০ একর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করা হয়েছে। এছাড়া অপেক্ষাকৃত অনুর্বর শত একর জমিতে চাষ করা গোলআলু ক্ষেতে এ কুমড়ার আবাদ করা হয়েছেন। বাড়ির গৃহীনিরাও তাদের বাড়ির আঙ্গিনায় পরিবারের চাহিদা মিটাতে ২-৪টি করে মিষ্টি কুমড়ার গাছ রোপণ করেছেন। এতে সবমিলিয়ে আরো অন্তত ৫০ একর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সুকল্প দাস বলেন, মিষ্টি কুমড়া চাষে সময়, শ্রম এবং খরচ কম হওয়ার পাশাপাশি বাজারে ভালো দামে বিক্রি করে লাভবান হতে পারছেন বলে কৃষকার এর চাষে ঝুঁকছেন। আমরা কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে যেয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করছি।