খুলনার পতিত জমিতে স্থানীয় কৃষকরা সূর্যমুখীর চাষ করছেন। প্রায় দুই একর পতিত জমিতে স্থানীয় কৃষকরা গড়ে তুলেছেন সূর্যমুখীর বিশাল ক্ষেত। কম খরচে বেশি ফলন দেখে চাষিরা সূর্যমুখী চাষে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সূর্যমুখী ফুল সবুজের মাঝে দেখলে মনে হয় যেন হাজারো সূর্য এক সঙ্গে খেলা করছে। সরকারি অফিসের সামনের ফাঁকা মাঠ, রাস্তার পাশ আর স্কুল-কলেজের চত্বরসহ বিভিন্ন পতিত জমি ভরে সূর্যমুখীর ফসল। এছাড়া রয়েছে গম, আলু, পেঁয়াজ, বেগুন, ঢ্যাঁড়শ, কাঁচা মরিচ ও টমেটোসহ নানা সবজির ফসল। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উদ্যোগে চাষিরা এসব পতিত জমিতে উৎপাদন করছে বিভিন্ন ধরনের ফসল।
নূরনগর এলাকার কৃষক শাহজাহান মিয়া বলেন, আমি প্রতি বছরই পতিত এ জমি গুলো ফাঁকা দেখছি। কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা আমাদেরকে এই পতিত জমি গুলোতে সূর্যমুখী চাষ করার জন্য বীজ ও সার সরবরাহ করেন। এখন পতিত জমি গুলো ফসলে ভরে গেছে। সূর্যমুখী চাষে লাভবান হতে পারবো বলে আশা করছি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলেন, খুলনায় ৯টি উপজেলাসহ শহরে ১০ হাজার ৯৭৫ হেক্টর অনাবাদি পতিত জমির মধ্যে এক হাজার ৪৩০ হেক্টর পতিত জমি চাষের উপযোগী করা হয়েছে। ফলে চাষিরা পতিত জমিতে ফসল উৎপাদন করে লাভবান হতে পারবেন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রো-টেকনলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইয়াসিন আলী বলেন, খাদ্য সংকট এড়াতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে আরও কার্যকর করতে পতিত জমি গুলোতে বেশি বেশি ফসল চাষ শুরু করতে হবে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাকেও যুক্ত করতে হবে। ফলে আরও অনেক বেশি পতিত জমি চাষের আওতায় আনা যাবে। এতে কৃষকরা যেমন লাভবান হতে পারবেন তেমনেই কৃষি অর্থনীতিতে উন্নতি বয়ে আনবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের খুলনার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) মো. মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। তবে কিছু এলাকা লবণাক্ত হওয়ায় সেখানে চাষাবাদ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, যাতে খুলনার সব পতিত জমি চাষের আওতায় আসে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, খুলনা মহানগরীসহ জেলার ১০৯টি প্রতিষ্ঠানের পতিত জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে।