নোয়াখালীর সুবর্ণচরের কৃষক মো. আজাদ হোসেন তরমুজ চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। বর্তমানে তার কোনো চাষাবাদের জমি না থাকলেও অন্যের জমি বর্গা নিয়ে নিজের স্বপ্ন পূরণের অঙ্গিকার করেছেন তিনি। অন্যান্য ফসল চাষে তেমন সবিধা করতে না পারলেও তরমুজ চাষে সফলতা পেয়েছেন। তার সফলতা দেখে আশে পাশের আরো অনেক কৃষক এই ফসল চাষে ঝুঁকছেন।
জানা যায়, কৃষক মো. আজাদ হোসেন নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের আল আমিন বাজার এলাকার বাসিন্দা। তার নিজের চাষাবাদের কোনো জমি নেই। তবে অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে থাকেন। চলতি বছর তিনি ১১ একর জমি বর্গা নিয়ে তরমুজের আবাদ করেছেন। তরমুজ চাষ করে তার ভুমিহীনতার পরিচয় চিরতরে মুছে ফেলতে চান। তার ইচ্ছা এবারের তরমুজ বিক্রির লাভের টাকার দিয়ে ৪-৫ শতক জমি কিনবেন। জমিতে তরমুজের ফলন ভালো পাওয়ায় তার স্বপ্ন পূরণের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এতে তিনি খুব খুশি।
কৃষক আজাদ হোসেন বলেন, সংসারের অভাব দূর করতে ২০০১ সালে চট্টগ্রাম চলে যাই। সেখানে ২০০-২৫০ টাকা দিনমজুরে কাজ করছিলাম। পরিশ্রমের তুলনায় তেমন আয় করতে পারছিলাম না। তখন সিদ্ধান্ত নিয়ে গ্রামে চলে আসি এবং সেখানে কৃষি কার শুরু করি। অন্যের কাছ থেকে ধার করে বিভিন্ন সবজির আবাদ করেছি। তবে অন্যান্য সবজি চাষে লোকসান গুনতে হয়েছে, তেমন সবিধা করতে পারিনি।
তিনি আরো বলেন, ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্যে অনেকের কাছ থেকে টাকা ধার করে ১১ একর জমি বর্গা নিয়ে তরমুজের চাষ করি। আমি নিজেই জমির দেখাশোনা করি। আমার ৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আশা করছি ১০-১২ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারব। অন্যান্য জেলার তরমুজের তুলানায় আমাদের এখানকার তরমুজ ১০ গুণ বেশি মিষ্টি। এর চাহিদা বেশি হওয়ায় পাইকাররা আমাদের জমি থেকেই তরমুজ কিনে নিয়ে যায়।
সুবর্ণচর উপজেলার কৃষি কর্মকতা মো. হারুন অর রশিদ বলেন, চলতি বছর নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ৪ হাজার ২৯০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। তরমুজ চাষে খরচ কম, গাছের রোগবালাই নেই বললেই চলে। আর উৎপাদিত ফসলের বাজরজাত সহজ হওয়ায় কৃষকরা বেশি লাভবান হতে পারেন। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করছি কৃষকরা লাভবান হতে পারবেন।