পাবনার ঈশ্বরদীতে গাজরের ব্যাপক ফলন হয়েছে। এই উপজেলার মাটি খুব উর্বর। উঁচু জমিতে গাজরের চাষ ভালো হয়। গাজর চাষে রোগ বালাই কম, স্বল্প শ্রম, উৎপাদন বেশি এবং দাম ভালো পাওয়ায় গাজর চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকের। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গাজরের ভালো ফলন হয়েছে। জমি থেকেই গাজর বিক্রি করতে পারলেও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লাভের আশা করতে পারছেন না বলে জানায় কৃষকরা।
জানা যায়, পাবনা ঈশ্বরদীর ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া, লক্ষীকুণ্ডা, সাহাপুর ও সলিমপুরে গাজরের চাষ হচ্ছে। গাজর চাষে রোগ বালাই কম, স্বল্প শ্রম, ও উৎপাদন বেশি হয়। আগে বাজারদর ভালো থাকলেও বর্তমানে গাজরের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। শ্রমিক, সার, বিষ, সেচ সব মিলিয়ে এক বিঘা জমিতে গাজর চাষ করতে চাষিদের খরচ হচ্ছে ৬০-৭০ হাজার টাকা। যা আগে খরচ হতো ৪৫-৫০ হাজার টাকা। গাজরের বাম্পার ফলন হলেও বাজারদর কম পাওয়ায় হতাশ চাষিরা।
চাষিরা বলেন, বিঘা প্রতি ১০০-১২০ মণ গাজরের ফলন পাওয়া যায়। এতে লক্ষাধিক টাকার উপরে গাজর বিক্রি করা যায়। ৯০ দিনের মধ্যে গাজর জমি থেকে উঠানো যায়। এবছর ১ কেজি গাজরের বীজ কিনতে হয়েছে ২১৫০০ টাকা দিয়ে। এতে গত বছরের তুলনায় খরচ দ্বিগুন হয়েছে। উৎপাদন খরচ বেশি হলেও বাজারে গাজরের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় আমাদের লাভ কম হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত ঈশ্বরদীর কৃষক জাহিদুল ইসলাম বলেন, এবছর আমি ১০০ বিঘা জমিতে গাজর চাষ করেছি। তবে গত বছরের তুলনায় এবছর গাজর চাষে খরচ বেশি হয়েছে। আগে গাজর চাষে বিঘাপ্রতি ৪২-৫০ টাকা খরচ হতো। বর্তমানে বীজের দাম বাড়ায় গাজর চাষে বিঘাপ্রতি ৬০-৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ৯০ দিনের মধ্যে গাজর জমি থেকে উঠানো যায়। এই ৯০ দিন প্রতিদিন নিজে থেকে গাছের পরিচর্যা করতে হয়। এতে নিজের মজুরি ধরলে লাভ আর থাকে না। বর্তমানে প্রতি মণ গাজর ১ লাখ ১০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করা যাচ্ছে।
গাজর চাষি ভুট্রু আলী বলেন, আমি আমার ১৭ বিঘা জমিতে গাজর চাষ করেছি। সব কিছু মিলিয়ে এই ১৭ বিঘা জমিতে গাজর চাষে ৮ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এবছর ১৭৩০০ টাকা কেজি গাজরের বীজ কিনতে হয়েছে ২১৫০০ টাকায়। তাই খরচ বেড়েছে। গাজর জমি থেকেই বিক্রি করা যায়। লাভের আশায় গাজর চাষ করলেও বাজারদরের কারণে লাভের পরিমান কমে গেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিতা সরকার বলেন, গাজর চাষ খুবই লাভজনক। এই উপজেলার মাটি গাজর চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এ বছর ঈশ্বরদী উপজেলার ৮৫০ হেক্টর জমিতে গাজরের চাষ করা হচ্ছে। গাজর বাজারে উঠলে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি গাজর বিক্রয় হয়। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে গাজর চাষে কৃষকদের সব রকম সহযোগিতা করা হয়েছে।